করোনার দাপটে বিশ্ব জুড়ে চলছে লকডাউন। তবে যতই লকডাউনের শাসানি থাকুক না কেন, তার তোয়াক্কা না করেই রাস্তায় বের হচ্ছেন বহু মানুষ। তারা না মানছেন প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞ, না শুনছেন আশপাশের লোকজনের সতর্কবার্তা। এই ঘটনা প্রায় সারা বিশ্ব জুড়েই চোখে পড়ছে সবার। এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনায় মুখর নেটিজেনরাও। এর ফলে যারা বিশেষ প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বেরোচ্ছেন, লোকজনের কটাক্ষ পিছু ছাড়ছে না তাঁদেরও। অথচ দৈনন্দিন বিশেষ প্রয়োজনে মানুষকে ঘর ছেড়ে বাইরে পা রাখতেই হচ্ছে। এসব কটাক্ষ এড়িয়ে সমস্যা সমাধানে এক অভিনব উপায় বের করেছেন টেক্সাসের বাসিন্দা ম্যারিঅ্যান ফউসি রেসেন্ডেজ।
ম্যারিঅ্যান একজন সিঙ্গেল মা। তাঁর শিশুকন্যাটি বয়সে খুবই ছোটো। ফলে লকডাউনের মধ্যে কন্যাকে সঙ্গে নিয়েই নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে নিকটবর্তী দোকানে যান তিনি। কিন্তু তারপরই ছোট বাচ্চাকে নিয়ে বাইরে বেরোনোর ফলে তীব্র ভর্ৎসনার শিকার হন ওই মা। এর থেকে বাঁচতেই একটি প্রতিবাদী পন্থা নিলেন তিনি। নিজের পাঁচ বছরের মেয়ের পিঠে একটি পোস্টার লাগিয়েই তাকে নিয়ে পথে নামেন তিনি। পোস্টারটিতে লেখা ছিল – “আমার বয়স মাত্র পাঁচ, আমার পক্ষে একা ঘরে থাকা সম্ভব না তাই প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে আমাকে মায়ের সঙ্গে রাস্তায় বের হতে হয়।” এছাড়াও কোনও ব্যাপারে কিছু না জেনে কারুর দোষ-ত্রুটি বিচার করাও বন্ধ করতে বলা হয়েছে পোস্টারটিতে। ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছাড়ার মুহূর্তের মধ্যেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। একদিকে যেমন তার এই কাজকে সমর্থন করেন বহু মানুষ, অন্যদিকে প্রতিবাদে মুখরও হন বেশ কিছুজন। তবে ম্যারিঅ্যানের দাবি, তিনি যথেষ্ট সাবধানতা ও প্রয়োজনীয় সর্তকতা অবলম্বন করেই তাঁর কন্যাকে নিয়ে বাইরে গেছেন। একা মা হওয়ার কারণে ছোট শিশুটিকে একা ঘরে রেখে যেতে পারেননি তিনি। তিনি আরও বলেন যে আজকাল এই সমাজে কিছু মানুষ অপরজনের বিষয়ে বিন্দুমাত্র না জেনেই তাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দেয়। যা অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ঘটনা। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখযোগ্য, পশ্চিমের একাধিক শহরেই বহু সিঙ্গেল পেরেন্ট ম্যারিঅ্যানের মতই এই সমস্যার শিকার। তাই ম্যারিঅ্যানকে রোল মডেল করেই এই অবস্থার উন্নতির চেষ্টায় তারাও এখন সচেষ্ট।
Discussion about this post