মিথ্যে হুমকি ও টাকা জালিয়াতি রুখে দেওয়ার ঘটনার সাক্ষী থাকল মহানগর। মিথ্যে হুমকিতে ভয় নয় বরং মেরুদন্ড সোজা রেখে তার মোকাবিলা করা প্রয়োজন। মানুষের কাছে এমনই এক দৃষ্টান্ত রাখলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্নাতকোত্তরের ছাত্র সঞ্জীব দাস।
আগরপাড়ার বাসিন্দা সঞ্জীব দাসের ফেসবুকে মুসকান শর্মা নামে একটি মেয়ের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট আসে। প্রোফাইলে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সে জয়পুর, রাজস্থানের বাসিন্দা। মেয়েটির ফেসবুকে আরো কয়েকজন মিউচুয়াল ফ্রেন্ড থাকায় রিকোয়েস্টটি সঞ্জীব গ্রহণ করেন। মেসেঞ্জারে অল্পবিস্তর কথাও হয় তাদের মাঝে। কিন্তু হঠাৎই, গত শনিবার রাত ১১:৫০ নাগাদ একটি অচেনা নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিও কল আসে সঞ্জীবের। প্রথমে মনে সন্দেহ জন্মালেও কোনো বন্ধুর নতুন নম্বর ভেবে তিনি ডিডিও কলটি গ্রহণ করেন। কলটি তুলতেই একটি মেয়ে সামনে আসে। মেয়েটি নিজে থেকেই প্রকাশ্যে নগ্ন হতে শুরু করে। সঞ্জীব ভিডিও কলটি তৎক্ষণাৎ কেটে দেন। তাঁকে যে বড়সড় মিথ্যে কোনও চক্রান্তে ফাঁসানো হচ্ছে এটি বুঝতে তাঁর দেরি হয়না। তারপরেই তাঁকে প্রায় ১ মিনিটের একটি ভিডিও পাঠানো হয়। যেখানে সেই ভিডিও কলের অংশ তো ছিলই, সাথে আরো অতিরিক্ত কিছু অংশ যুক্ত করা হয়েছিল। যেখানে অন্য একজন লোককে হস্তমৈথুন করতে দেখা যায়।
১ মিনিটের ভিডিওটি সঞ্জীবকে পাঠিয়ে বারবার হুমকি দিতে থাকে মুসকান শর্মা নামে মেয়েটি। তাঁর কাছে ২ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়। টাকা না দিলে ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকিও দেয়। সঞ্জীব সেসব কানে না তুলে থানায় অভিযোগ করবে জানায়। আর তাতেই ভয় পায় জালিয়াতরা। ২ লক্ষের বদলে তারা ২০ হাজার টাকা দাবি করে। কিন্তু সঞ্জীব অনড় থাকে নিজের কথায়। শেষমেশ মেয়েটি একটি নম্বর পাঠায় আর সেখানে শুধুমাত্র রিচার্জ করার কথা বলে! সঞ্জীব আর বিন্দুমাত্র দেরি না করে ঘোলা থানায় তিনি একটি এফআইআর দায়ের করেন।
পুলিশও ইতিমধ্যে তদন্তে নেমেছে। পুলিশের ধারণা এই চক্রান্তের পিছনে নিশ্চয় কোনো গোষ্ঠীই কাজ করছে। যারা এর আগেও অনেককে এভাবে ফাঁসিয়েছে। এদিকে বৃহস্পতির সকালেই ফের এক পুলিশ কর্তার নাম করে অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে। তাঁকে বলা হয় মুসকানের তরফ থেকেও পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সঞ্জীবের ধারণা, পুরো ব্যাপারটাই ভুয়ো এবং তার ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্যই এমনটা করা হচ্ছে।
Discussion about this post