রবি ঠাকুরের অচলায়তনের এই বুঝি বাস্তবতা। গত দু বছর ধরে চলছে করোনা কান্ড। আর তার ফল স্বরূপ এখনও বন্ধ হয়ে রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। পেটের দায়ে বাকি সমস্ত প্রতিষ্ঠানের কাজ যদিও সচল। তবে মাঝে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে ভেবে শুরু হচ্ছিলো পড়াশোনা, কিন্তু সে পরিকল্পনাতেও ছেদ পড়ল।
কোভিডকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বাদ নেই কোনোকিছুই। মিটিং মিছিল থেকে শুরু করে একাধারে সবই চলছে। তবে বন্ধ কেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি? কেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা হচ্ছে না স্কুল- কলেজ – বিশ্ববিদ্যালয়? অবিলম্বে যাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি খোলা হয় সেই দাবিতেই গত বৃহস্পতিবার জমায়েত করেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। হুগলির খাদিনা মোড় থেকে ঘড়ির মোড় পর্যন্ত চলে পদযাত্রা। এতে সামিল ছিলেন শিক্ষাকর্মী এবং কলেজ পড়ুয়ারাও।
২০২০ সালে কেন্দ্র সরকারের জাতীয় শিক্ষা আইন তুলে নেবার কথাও বলেন তারা। যে আইনে বলা হয়েছে, অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থাকে গ্রহণ করার কথা। তবে এ গরিবের দেশে সে ব্যবস্থা পাবে ক’জন? এমনটাই বলেছেন যাদবপুর হাই স্কুলের শিক্ষক কুমুদ মণ্ডল মহাশয়। তার মতে, ‘অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থায় বা পাড়ার শিক্ষা দানে কখনোই একজন ছাত্র-ছাত্রীর পরিকাঠামো সঠিকভাবে গঠন করা সম্ভব নয়’। তিনি আরও জানান যে, এতদিন পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললে ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে পুনরায় উৎসাহ জাগিয়ে তুলতে হবে। তাতে প্রয়োজনে প্রত্যেক শিক্ষক-শিক্ষিকা নিজেদের স্নেহের পরশ দিয়ে কর্মে মনোনিবেশ করবেন। আসলে তো ছাত্র-ছাত্রীরা সন্তানের মতোই। শিক্ষা নিয়ে ছিনিমিনি খেলা বন্ধ হওয়া ভীষণ দরকার।
ইংরেজ ভারতীয়দের শিক্ষিত করতে চায়নি এককালে। আজকের পরিস্থিতি কি তবে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি? টিচাররা না পড়িয়ে বসে বসে মাইনে পাচ্ছেন। কারণ বর্তমানে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই বন্ধ। তবে কি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের শ্রেণী শত্রু বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে অগোচরে? এমনই নানান প্রশ্ন সমেত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে চলেছে বৃহস্পতিবারের আন্দোলন। অবশেষে জেলাশাসকের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে ডেপুটেশন। তাদের দাবি যদি কার্যকরী না হয় তবে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে তারা পিছপা হবেন না।
Discussion about this post